আয়মান সাদিক একটি কথা বলেছিলেন!
আসলেই সত্যিকার অর্থে আমরা বাঙালিরা অনেকটা অলস এবং বুদ্ধিহীন বটে। কোন কিছু করার পূর্বে খুব একটা বেশি চিন্তা আমাদের মাথায় আসেনা, খুব একটা বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন মনে করিনা আমরা। বিষয়টি একটি গল্পের মাধ্যমে আয়মান সাদিক তুলে ধরেছিলেন কিছু সংখ্যক মানুষের মাঝে।
একটি রাজ্য পরিচালনার জন্য আমরা সবাই জানি একজন রাজা তম প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি একটা রাজ্যে একটা রাজা ছিল! রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে শুধু রাজা ই যথেষ্ট নয় মন্ত্রী থাকে তাছাড়া রাজার দেখ-বালের জন্য অনেক লোক থাকে এছাড়াও বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন লোক নিয়োজিত থাকে কিন্তু সবার ঊর্ধ্বে রাজাই শক্তিমান। হঠাৎ করে রাজা চোখে কম দেখা শুরু করলো, রাজা চোখে দেখতে পাচ্ছে কিন্তু খুব কম এটা তার কাছে মনে হচ্ছে।
রাজ্য থেকে অনেক দূরে এক জ্যোতিষীর দেখা মিলল রাজা কে খবর দিলো রাজামশাই আমাদের রাজ্য থেকে অনেক দূরে এক জ্যোতিষী আছেন যিনি আপনার এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন! রাজা বলল কি বল! পারবে তখনই সমস্যা সমাধান করতে? সেনাপতি বললেন হ্যা উনি পারবে বলে আমার বিশ্বাস আছে। রাজামশাই বললেন ঠিক আছে চলো আমরা যাই তার নিকটে।
বর্তমান সময়ের মতো আগের দিনে তো গাড়ি ছিল না ঘোড়ার পিঠে চড়ে এইতো রাস্তা পার হতে হতো। অনুরূপভাবে রাজামশাই তার কিছু সৈন্য নিয়ে ঘোড়ার পিঠে চড়ে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে জ্যোতিষী বাবার কাছে পৌঁছাল। জ্যোতিষী বাবার দেখা মিলল জ্যোতিষী বাবাকে বিস্তারিত খুলে বলার পরে তিনি সমাধান দিল!
জ্যোতিষী ব্যবহার সমাধান হলো তার চোখের সামনে সবকিছু লাল করে রাখতে হবে। এটাকি মুসিবত নয়? একজন রাজা রাজ্য পরিচালনাকারী তাকে কত জায়গায় যেতে হবে তার চোখের সামনে কত কিছু পড়বে সব গুলো কিভাবে লাল করবে বিষয়টি নিয়ে রাজা খুবই চিন্তিত। রাজা বাসায় বলল ঠিক আছে আমি আপনার দেওয়া শালিনী অবশ্যই রাখার চেষ্টা করব। এবার তো অবস্থায় রাজামশাই তার সৈন্যদের নিয়ে রাজ্য চলে আসেন। তেমন চিন্তা ভাবনা করল না হঠাৎ করে মাথায় বুদ্ধি চলে আসলো।
রাজার মাথায় বুদ্ধি আসলো যে আমার চোখের সামনে যা কিছু আছে সব কিছু আমি লাল রঙে পরিণত করে ফেলব, রাজামশাই তার রাজ্যের সেনাপতি ও মন্ত্রী সবাইকে ডেকে বলল আমার রাজ্যে যা কিছু আছে সব লাল রঙের পরিণত করে ফেলো, সব গুলোর উপর লাল রং করে দাও যাতে আমার চোখের সামনে লাল ছাড়া অন্য কোনো রং না দেখতে পাই। যেহেতু রাজ্যের পরিচালক রাজামশাই বলেছেন এ কথার উপরে কারো কথা বলার শক্তি নেই। মন্ত্রী-সহ সেনাপতি সবাই বললো ঠিক আছে রাজামশাই আমরা এখন থেকেই কাজ শুরু করছি।
রাজামশাই খুশি আবার চোখ ঠিক হয়ে যাবে এভাবে করলে। কয়েকদিনের মধ্যে রাজার রাজ্য সহ আশেপাশের যা কিছু ছিল পুরো একটা গ্রামের সবকিছু লাল রঙে পরিণত করে ফেলল। যদিও রাজ্যের বাইরে বের হওয়া যাবে না কারণ অনেক কিছুই এখনো বিভিন্ন রঙে রয়েছে সেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব না যেমন আকাশ গাছপালার রং এগুলো তো আর পরিবর্তন করা সম্ভব না রাজামশাই রাজ্যের মধ্যে থাকলো বেশ কয়েকদিন চোখের সামনে যা কিছু ছিল সবই লাল। এমন ভাবে বেশ কয়েকদিন চলতে লাগলো।
রাজামশাই তার রাজ্যের মধ্যে হাঁটাচলা করে ঘুমাতে গেলে খাইতে গেলে চোখের সামনে সব লাল এমনকি আস্তে আস্তে উনার চোখের পরিবর্তন চলে এসেছে। সুরা মুলক ভাবে আগের থেকে উনি অনেকটা ভালো দেখছে। যেহেতু জ্যোতিষী বাবার কথায় ওনার চোখের জ্যোতি অনেকটা ফিরে পেয়েছে এ জন্য উনি খুশি হয়ে তার মন্ত্রী কে পাঠিয়েছে চোর জ্যোতিষী বাবার নিকটে তাকে ডেকে আনার জন্য। মন্ত্রী-সহ তার সহপাঠী বেশ কয়েকজন গেল জ্যোতিষী বাবাকে সম্ভার্ধনা করে নিয়ে আসার জন্য। অনুরূপভাবে জ্যোতিষী বাবাকে নিয়ে আসা হলো রাজার রাজ্য। রাজ্যের ওকে মাত্রই রাজার দেখভালের জন্য যারা রয়েছে তারা সাথে সাথে জ্যোতিষী বাবার মাথা থেকে পা পর্যন্ত লাল রঙে চুপচুপ করে ফেলেছে। জ্যোতিষী বাবা অবাক!
জ্যোতিষী বাবা রাজার নিকটে আসার পরে জিজ্ঞেস করল রাজামশাই আমাকে কেন এভাবে লাল রঙে চুপচুপে করা হলো? রাজামশাই বলল আপনিতো বলেছেন আমার চোখের সামনে সব সময় যেন সবকিছু লাল রাখি অর্থাৎ আমি যেন সব সময় লাল দেখি তাহলে আমার চোখ ঠিক হয়ে যাবে। জ্যোতিষী বাবা বলল তাই বলে সবকিছু লালবাগে পরিণত করতে হবে আপনাকে? রাজামশাই বললো কী করবো এসারা তো আর উপায় ছিল না।
জ্যোতিষী বাবা বলল আপনি কি সর্বোচ্চ সময় নিয়ে ভেবেছিলেন? রাজা বলল সময় নিয়ে ভাবার কি আছে এটা তো সহজ বিষয় যে সবকিছু লাল রঙে পরিণত করতে হবে তাহলেই কেবলমাত্র আমি সব লাল দেখতে পাবো। জ্যোতিষী বাবা বলল না রাজা মশাই আপনি ভুল ভাবছেন!! আপনি চাইলে কেবলমাত্র একটা লাল চশমা পড়েই সবকিছু লাল দেখতে পেতেন। সবকিছু লাল দেখার জন্য এভাবে রং করে করে লাল করার কোন প্রয়োজন ছিল না। রাজামশাই বলল আসলেই তো, আমি একটা লাল চশমা পড়লেই তো পারতাম সব কিছু আমার চোখের সামনে লাল হয়ে যেত আমি কেনো এইভাবে করলাম।
জ্যোতিষী বলল! রাজামশাই আমরা কোন কিছু করার পূর্বে এত বেশি ভেবে দেখি না আমরা হঠাৎ করে সব কিছু করে ফেলি। আমাদের চিন্তা শক্তি কম। আমাদের চিন্তা শক্তির মাত্রা আরও বৃদ্ধি করতে হবে তাহলেই কেবলমাত্র আমরা সর্বোচ্চ চিন্তার মাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।
গল্পটি পড়ে আপনার অনুভূতি কেমন হল অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।